Header Ads Widget

Responsive Advertisement

আইসিউইতে কথা বলার আকুতি, লিখতেও পারলেন না

 

ইনফি ইয়াসমিন (ববি) বললেন, ‘স্বামীকে নিয়ে ১০ দিন আইসিইউতে ছিলাম। যারা এখনো মনে করে যে করোনা কিছু না, তাদের একটিবার এক মিনিটের জন্যও যদি আইসিইউতে ঢুকিয়ে দেখাতে পারতাম, তাহলে বুঝতেন, করোনা কাকে বলে। বুঝতে পারতেন, মৃত্যুযন্ত্রণা কাকে বলে। আমারও বিশ্বাস ছিল, স্বামী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরবেন, কিন্তু ফিরলেন না। আমাদের অনাগত সন্তান বাবার চেহারাটাও দেখতে পাবে না। আর ৯ বছরের ছেলে শুধু বলছে, “তুমি আমার আব্বুকে এনে দিতে পারলে না।”’

শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) মাত্র ৩৬ বছর বয়সে মারা গেছেন ইনফি ইয়াসমিনের স্বামী শেখ সালাউদ্দিন। ইনফি ইয়াসমিন বর্তমানে আড়াই মাসের অন্তঃসত্ত্বা। ৯ বছর বয়সী ছেলেটা পড়ছে দ্বিতীয় শ্রেণিতে।

স্নাতক শেষ করার আগেই পাবনার মেয়ে ইনফি ইয়াসমিনের বিয়ে হয় ২০০৬ সালে। সংসার সামলানোর পাশাপাশি ইনফিস কেক নামে ফেসবুকে একটি পেজের মাধ্যমে উদ্যোক্তা হিসেবে যাত্রা করেন। সহযোগী ছিলেন স্বামী। শেখ সালাউদ্দিন তাঁর বোনের বায়িং হাউসে কর্মরত ছিলেন। রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় শাশুড়ি, ভাশুর, ননদসহ সবাই একসঙ্গে থাকেন।

আজ সোমবার কথা হয় ইনফির সঙ্গে। তিনি এখনো বিশ্বাস করতে পারছেন না যে স্বামী মারা গেছেন। মারা যাওয়ার আগে ইশারায় স্বামী তাঁকে কিছু বলতে চেয়েছিলেন, কিন্তু কথা বলতে পারতেন না। তাই কাগজে লিখে কিছু বলতে চান কি না, তা জানতে চাইলে ইশারায় হ্যাঁ বলেছিলেন। কাগজ-কলম দিলে কিছু লেখার চেষ্টাও করেছিলেন, হাত কাঁপার জন্য লেখা স্পষ্ট হয়নি। স্বামী মারা যাওয়ার পর ইনফি সেই লেখাই ফেসবুকের কভার ফটো করে রেখেছেন।

আর ফেসবুকের প্রোফাইলে কোনো এক সময় ইনফি লিখেছিলেন, ‘একটা ছোট শান্তির নীড়, সেখানে প্রিয় কিছু মুখ, আর সেই মুখে হাসি, সাথে স্বস্তির ছোট্ট নিশ্বাস চাই।’ তবে ইনফির ছোট নীড়ের সব থেকে প্রিয় মুখটি হুট করেই হারিয়ে গেল। প্রতিটি মুহূর্ত কাটছে আতঙ্কে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ